বিশ্বের বিস্ময়কর ঐতিহ্য ‘আর্টেমিসের মন্দির’

প্রকাশঃ এপ্রিল ২১, ২০১৫ সময়ঃ ৭:৫৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৫৫ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

artimistempleতুরস্কের ইজমির প্রদেশের পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটি শহর ইফেসাস যা গ্রিকদের শহর বলে পরিচিত। ঐতিহাসিক এই শহরটিতে অবস্থিত আর্টেমিসের মন্দিরটি বিশ্বের সাতটি প্রাচীন বিস্ময়ের একটি । ধরে নেওয়া হয়, আর্টেমিসের মন্দিরটি ব্রোঞ্জ যুগে তৈরি করা হয়েছিলো। কিন্তু পরে এক ভয়াবহ বন্যা, অগ্নি সংযোগ ও উপজাতিদের আক্রমণে এটি ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে এখানে শুধু ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।

‘আর্টেমিস মন্দির’ গ্রিকদের হলেও রোমানরা এটিকে ‘ডায়না মন্দির’ বলে। গ্রিক পৌরণিক মতে আর্টেমিস ছিলেন গ্রিকদের দেবী। রোমানরা আবার তাকে বলতো ‘দেবী ডায়না’। দেবী ডায়না বা দেবী আর্টেমিস ছিলেন শিকারের দেবী। প্রাচীনকালে মানুষ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো বলে তারা এ দেবীর উপাসনা করতো।

এই চমৎকার মন্দিরটি ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পুনঃনির্মাণ শুরু হয়েছিল। দেবীর মূর্তির ঘরের চারিদিকে দুই সারিতে ৩৬টি কলাম ছিল। যার উচ্চতা ছিল ৪০ ফুট। মন্দিরটির পুরোটাই ছিল মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি। এর ছাদ তৈরি করা হয়েছিল নকশা করা কাঠ দিয়ে। ধারণা করা হয় খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ অব্দে গ্রিকরা এই আর্টেমিস মন্দির নির্মাণ করে। মন্দিরটি লম্বায় ৩৭৭ ফুট ও প্রস্থে ১৫১ ফুট। এ মন্দিরটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ১২০ বছর। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে এক ভয়াবহ বন্যায় মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্দিরের অনেকাংশ বালু ও পলিমাটিতে চাপা পড়ে।

মহান সম্রাট আলেকজান্ডার এর জন্মের সময় মন্দিরে অগ্নি সংযোগ হয়ে মন্দিরটি ধ্বংস হয়ে যায় । কথিত আছে, জনৈক ব্যাক্তি বিখ্যাত হবার আশায় মন্দিরটিতে অগ্নি সংযোগ ঘটায়। পরবর্তিতে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে মন্দিরটির পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়। অনেক বছর ধরে নির্মাণ কাজ চলার পর মন্দিরটি নতুন রূপ পায়। এবার এর আয়তন ছিল আগের চেয়ে অনেক বড়। লম্বায় ৪৫০ ও প্রস্থে ২২৫ ফুট এবং উঁচু ৬০ ফুট। কলাম ছিল ১২৭টি। দেয়ালে ছিল অনেক চিত্রকর্ম আর কলামগুলো ছিল সোনা-রূপায় মোড়ানো। তাছাড়া প্রতিটি দেয়ালে ছিল মণিমুক্তা ও হীরার মতো মূল্যবান জিনিস। প্রবেশ পথে ছিল দুটি ডায়নার মূর্তি। যা ছিল মার্বেল পাথরের তৈরি ও রত্ন খচিত। মন্দিরটি মার্বেল তৈরির কারণে অনেক দূর থেকে দেখা যেতো এবং রাতে চাঁদের আলোতে চকচক করতো। মন্দিরের ভিতরে ব্রোঞ্জ দ্বারা নির্মিত চারটি নারী এবং আর্টেমিস এর মূর্তি ছিল।

পরবর্তিতে ২৬৮ সালে পূর্ব জার্মানির গোথ উপজাতি আক্রমণ ও লুটপাট করে এটি ধ্বংস করে লুটপাটের সামগ্রী দেয়। জাহাজে করে নিয়ে তারা চলে যায়। এরপর পুনঃনির্মাণ বা মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G